তখন কিসেইবা পড়ি ফোর কি ফাইভ। মাঝু নামে এক পাগলা মোড়ের দোকানের সামনে বসে থাকত কিছুদিন । বিড় বিড় করে কিছু বলার চেষ্টা করত কিন্তু কেউ শুনতো না তার কথা ।অনর্গল ইংলিশে কথা বলত মাঝে মধ্যে ।তখন আমরা কয়েক জন খেলার সাথী ওনাকে গোল করে বসে যেতাম ইংরেজীতে পন্ডিত হবার আশায়। বাবা ইংরেজীর টিচার খুঁজছেন একদিন আমি বললাম ,দরকার নাই মাঝু কাকু আছে তো ওনার কাছেই শিখব।বাবা কিছু বললনা কিন্তু ওনার কাছে যেতে বারন করলেন ,কিন্তু আমার মন শুনতে চাইতনা।ওনার প্রতি আমার আকর্ষনটা আরও বেড়ে যেত ।সকলে ভয় পেত আমার ভয় লাগত না অজানা ভালবাসায় বুকের মধ্যে কেঁদেউঠত ।মাঝে মাঝে বাসা থেকে রুটি আলু ভাজি দিয়ে আসতাম ।ক্ষুধার্ত পেটে সবটাই খেতআর ছল ছল চোখে তাকিয়ে থাকত।কোন এক শ্রাবনের সন্ধ্যায় বাইরের কোলাহলে মাকে জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছে মা ?মা কিছু না বলেই চলে গেল ।পরের দিন সকাল স্কুলে যাওয়ার সময়দুটো রুটি লুকিয়ে নিয়ে ব্যাক পকেটে নিলাম । তুমুল বৃষ্টিতে সব ভিজে যাওয়ার জোগাড় তবুও স্কুলে যেতেই হবে বাসার সামনে পুলিশের গাড়ি দেখে ভয়ই পেলাম এক কোনায় দাড়িয়ে দেখি রক্তভেজা মাঝু ফকিরের লাস। দেীড়ে বাসায় এসে মাকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলাম কে মেরেছে ওনাকে কেন মেরেছে জিজ্ঞাসা করেও উত্তর পাইনি ,আজও পাইনি। শুধু এটুকুই শুনেছি কোন কারনে বলির পাঠা হয়েছিল মাঝু কাকা। কেউ কাঁদেনি তার মৃত্যুতে কিন্তু কেউ জানতেও পারলনা এক কিশোরী সেই থেকে আজও মনের মনি কোঠাতে ঠাই দিয়েছে মাঝু নামের ঠিকানা বিহীন এমন একজনকে।
ConversionConversion EmoticonEmoticon